সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন তৎকালীন আইজিপির বর্ণনায় ৫ আগস্ট সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন জামালগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন সুনামগঞ্জ হাসপাতালে ১২ ধরনের আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জুলাই গণহত্যা : রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুন শিক্ষাক্ষেত্রে সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চাই : জেলা প্রশাসক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ না করার নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক স্ত্রীর সাথে অভিমান করে স্বামীর আত্মহত্যা প্রকৌশলী কামরুল হকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য স্বজনদের দাবি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত নির্বাচনে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি থাকবে নৌ ও বিমান বাহিনী সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল উদ্বোধন অকেজো ১০ হাজার নলকূপ বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ জামালগঞ্জে যুবদলের কর্মী সমাবেশে কৃষক লীগ নেতা! ‎সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নতুন সভাপতি শামস শামীম, সম্পাদক জসিম মাছশূন্য হাওর, সংকটে জল-জীবিকা ব্রিটিশ-বাংলাবাজার সড়ক বেহাল : দুর্ভোগে হাজারো মানুষ ভিপি নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

পথে যেতে যেতে : পথচারী

  • আপলোড সময় : ১৫-০৭-২০২৫ ০৮:৩৩:৩১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-০৭-২০২৫ ০৮:৩৩:৩১ পূর্বাহ্ন
পথে যেতে যেতে : পথচারী
সিলেটের মাটি হযরত শাহজালালের (রহ.) মাটি, সিলেটের মাটি হযরত শাহপরাণের (রহ.) মাটি। এই মাটিতে জন্ম নিয়েছেন কত হাজার লক্ষ কোটি গুণী মানুষ। তারা সিলেটকে জনপ্রিয় করেছেন বিশ্বের দরবারে। তাদেরই একজন হচ্ছেন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। ১০ জুলাই ছিল তার মৃত্যু দিবস। এ প্রজন্মের মানুষ তাকে চেনার কথাই নয়। কিন্তু তাকে তো আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। কেননা তাদের ত্যাগ, তিতিক্ষা, সাধনা আমাদের সামনে চলার পথ দেখাবে। হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর জন্ম ১৯২৮ সালের ১১ নভেম্বর সিলেট শহরের দরগাহ গেইটস্থ রশিদ মঞ্জিলে। পিতা আব্দুর রশীদ চৌধুরী ছিলেন অবিভক্ত ভারতের কেন্দ্রীয় বিধান সভার সদস্য এবং মাতা সিরাজুন নেছা চৌধুরী ছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য। বরেণ্য পিতা-মাতার সন্তান হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। তিনি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার। একধারে তিনি ছিলেন কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি। সিলেটের এক ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান ছিলেন তিনি। সিলেটের প্রাচীন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সরকারি আলীয়া মাদ্রাসার হাই মাদ্রাসা সেকশনে প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ করেন তিনি। এরপর আসামে মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৪৪ সালে ৮টি ক্রেডিটসহ সিনিয়র ক্যামব্রিজ পাস করে ১৯৪৭ সালে ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞান, রসায়ন ও ভূগোল বিষয়ে ¯œাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য চলে যান যুক্তরাজ্যে। সেখানে তিনি ইংলিশ বার-এ আইন শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। মোটকথা অধ্যয়নে মি. রশীদ চৌধুরী মোটেও থেমে থাকেন নি। তার অদম্য আগ্রহ পড়াশোনা আর পড়াশোনা। তাই এক বন্ধুর পরামর্শে ভর্তি হন লন্ডনস্থ ইনার টেম্পোলে। সেখানে তিনি সদস্য হয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। কঠিন অধ্যবসায়ে তিনি ডুবে থাকতেন দিন-রাত্রির অধিকাংশ সময়। এক পর্যায়ে লন্ডন ইন্সটিটিউট অব ওয়ার্ল্ড থেকে ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্স বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যস্থ পাকিস্তান ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ছাত্র আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়েন। ভাবতে থাকেন রাজনীতি নিয়ে। যে রাজনীতি হবে দেশের স্বার্থে। সাধারণ মানুষ বঞ্চনার শিকার যাতে না হয়, সে চিন্তা মাথায় রাখতেন। ১৯৫২ সালে পাকিস্তান ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। এবার তিনি নতুন ভাবনা নিয়ে এগোতে থাকেন। শুরু করেন কর্মজীবন। যোগ দেন পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে। চাকরি জীবনে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ স্থান হচ্ছে ‘ফরেন সার্ভিস’।। সেখানেও পড়াশোনা। এবার যুক্তরাষ্ট্রের মাসাচুসেটস্থ টাইটস বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফ্লেচার স্কুল অব ল’ এন্ড ডিপ্লোমেসি থেকে পুনরায় গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে তার ভূমিকা অসাধারণ। এ সময় কূটনৈতিক অঙ্গনে ঐতিহাসিক অবদান রাখেন। ১৯৭১-৭২ সালে নতুন দিল্লিস্থ বাংলাদেশ মিশনের প্রধান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অন্যান্য অনেক দায়িত্ব পালনের সাথে তিনিও একজন অংশীদার। সবারই ধারণা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পূর্বেই ভুটান ও ভারতের বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান, তারই অবদান। এ সময় ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর ভারতের পার্লামেন্টে যে ভাষণ দেন তা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তার এই ভাষণ এ জন্য বিরল ঘটনা যে, প্রধানত কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাই এ ধরনের ভাষণ দিয়ে থাকেন। দেশ স্বাধীন হলে সর্বপ্রথম রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন জার্মানিতে। নতুন দায়িত্ব পেয়ে সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং হলিসি’র রাষ্ট্রদূত হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গঠনেও ভূমিকা পালন করেন। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি নিযুক্ত হন। জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। সৌদী আরবেও বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন। এরপর সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূত নিযুক্তকালীন পাশাপাশি জর্ডান, ওমান এবং ইয়েমেনেরও রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। এমনই বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন জনাব হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। ২০০১ সালের ১০ জুলাই এই অসামান্য প্রতিভাধর মানুষটি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। আমরা তার আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন

দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন